• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সুস্বাস্থ্যের জন্য পুষ্টির সেরা পুঁইশাক

সুস্বাস্থ্যের জন্য পুষ্টির সেরা পুঁইশাক

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

পুঁইশাক। বাংলাদেশে বহুল জনপ্রিয় একটি শাক। এটি সবজি হিসেবেও খাওয়া হয়। এটি পুষ্টিগুণে অত্যন্ত উপকারি একটি সবজি। পুঁইশাকের পাতা শাক হিসেবে খাওয়া হয় এবং এর ডাটা সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। পুঁইশাকের ফল খুবই উপকারী একটি খাদ্য উপাদান।

প্রিয় পাঠক আমরা এই পর্বে ‘পুঁইশাক’-এর পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা নিয়ে কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য দেয়ার চেষ্টা করেছি। চলুন দেখে নেয়া যাক কি আছে পুঁইশাকে-

পরিচয়

উইকিপিডিয়ায় প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, পুঁইশাক এক প্রকার লতা জাতীয় উদ্ভিদ। পুঁই গাছের পাতা ও ডাঁটি শাক হিসেবে খাওয়া হয় বলে একে পুঁই শাক হিসাবে ডাকা হয়। বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরায় এটি বেশি পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস বলছে, বছরের সব সময়ই সারা দেশেই পুঁইশাক পাওয়া যায়। এটি গাঢ় সবুজ রঙের পাতা ও ডগাযুক্ত সবজি। তবে পুঁইশাক খয়েরি রঙেরও হয়ে থাকে। এই শাকটি বহুবিধ রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়া এটি ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এটি ভাজি ও তরকারি, উভয়ভাবেই রান্না করে খাওয়া যায়।

পুষ্টিগুণ

উইকিপিডিয়া ও কৃষি তথ্য সার্ভিসে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, পুঁইশাকে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, অ্যামাইনো অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়ামসহ নানা পুষ্টি উপাদান।

উপকারিতা

পুষ্টিবিদদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস বলছে, পুঁইশাক খেলে-

ক্যান্সার প্রতিরোধ করে : পুঁইশাক খেলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করে। ফলে নিয়মিত পুঁইশাক খেলে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে : নিয়মিত পুঁইশাক খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যা দেহে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে : নিয়মিত পুঁইশাক খেলে শরীরে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি এর ঘাটতি দূর হয়। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া এতে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

সংক্রমণ দূরে রাখে : পুঁইশাকের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান সাধারণ সংক্রমণ থেকে আমাদের শরীরকে সুরক্ষিত রাখে।

জ্বর নিরাময় হয় : আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই জ্বর ও হালকা সর্দি কাশিতে আক্রান্ত হন। কিন্তু আপনি যদি নিয়মিত পুঁইশাক খান, তাহলে জ্বর নিরাময় হবে দ্রুত।

দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে : পুঁইশাকে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও প্রচুর আয়রন। যে কারণে এটি দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে ব্যাপক সহায়তা করে। এছাড়া এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি ও ভিটামিন এ। ফলে এটি রাতকানা রোগ নিরাময়ে খুবই কার্যকরী।

হাড় মজবুত করে : এতে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও আয়রন। এটি হাড় মজবুত করতে খুবই কার্যকরী। এছাড়া জটিল হাড়ের রোগ নিরাময়েও পুঁইশাক দারুণ ভূমিকা পালন করে।

হৃদযন্ত্র ভালো রাখে : পুঁইশাকে রয়েছে প্রচুর আয়রন ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। যা শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। তাই নিয়মিত পুঁইশাক খাওয়ার অভ্যাস করুন।

রক্তশূন্যতা দূর করে : শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার মাত্রা বাড়াতে পুঁইশাক ব্যাপক কাজ করে। নিয়মিত পুঁইশাক খেলে রক্তশূন্যতা দূর হবে।

হজমশক্তি উন্নত করে : পুঁইশাকের অন্যতম প্রধান গুণ হল-হজমশক্তি উন্নত করা। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যআঁশ। যা হজমে সহায়ক অ্যাসিডের ক্ষরণ বৃদ্ধি করে। ফলে হজমশক্তি উন্নত হয়। সেই সঙ্গে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাও দূর হয়।

সতর্কতা

পুষ্ঠিবিদরা বলছেন, পুঁইশাকের কিছু অপকারিতা রয়েছে। বেশি পরিমাণে পুঁইশাক খেলে এর্লাজির মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। পুঁইশাকে রয়েছে অক্সালেটস, এটি বেড়ে গেলে শরীরে নানা ধরণের জটিলতা বেড়ে যেতে পারে।এছাড়া যারা ইউরিক অ্যাসিড বা গেঁটে বাত ও কিডনীতে পাথর জনিত রোগে ভুগছেন, তারা পুঁইশাক খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

তথ্যসূত্র : বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস ও উইকিপিডিয়া

 

এবি/এসএন

১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৭:৫৪পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।