• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আদর্শ খাবার দুধ কেন খাবেন, কখন খাবেন না

আদর্শ খাবার দুধ কেন খাবেন, কখন খাবেন না

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

আদর্শ খাবার দুধ। এতে রয়েছে সব ধরণের পুষ্টি উপাদান। দুধ খেতে ভালোবাসেন না, এমন মানুষ পাওয়া কঠিন। নানা উৎস থেকে আমরা দুধ পেতে পারি। তবে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি দুধ পাওয়া যায় প্রাণিজ উৎস তথা গবাদিপশু থেকে। বিজ্ঞানের উৎকর্ষতার ফলে এখন গুঁড়া দুধ, পাস্তরিত দুধসহ দুধের তৈরি নানা খাবার সহজেই পাওয়া যাচ্ছে।

আমরা নিয়মিত দুধ খেলেও হাতেগোনা কয়েকটি পুষ্টি উপাদান ছাড়া দুধের অধিকাংশ পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানি না। তাই ‘আমরাই বাংলাদেশ’র পাঠকদের জন্য আমরা দুধের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা নিয়ে কিছু তথ্য জানানোর চেষ্টা করেছি। চলুন দেখে নিই দুধে কি আছে-

পুষ্টিগুণ

দুধ হল নির্যাস বা মাখন চর্বির কোলয়েড কনা মিশ্রিত তরল। যাতে রয়েছে দ্রবীভূত শর্করা ও আমিষ। রয়েছে নানা ধরণের খনিজ উপাদান। এটি শিশুখাদ্য হিসেবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এতে রয়েছে লিপিড, ল্যাক্টোজ ও আমিষ। যা এ্যামিনো এসিডে পূর্ণ একটি জৈব উপাদান। এতে রয়েছে প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড।

স্বাস্থ্য গবেষক ও পুষ্টিবিদদের বরাত দিয়ে নিউইয়র্কের জনপ্রিয় স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ লাইন ডটকম জানিয়েছে, প্রতি ১০০ মিলিগ্রাম দুধে রয়েছে

জলীয় অংশ ৮৭.৭ শতাংশ
ক্যালরি ৬৪ কিলোক্যালরি
প্রোটিন ৩.৩ গ্রাম
আঁশ ০.৭ গ্রাম
ফ্যাট ৩.৬ গ্রাম
কোলেস্টেরল ১১
পটাশিয়াম ১৪৪ এবং
ভিটামিন এ ১৪০ আইইউ।

এছাড়া দুধে রয়েছে ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি, ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, সোডিয়াম, আয়রন ও অন্যান্য খনিজ উপাদান।

উপকারিতা

উইকিপিডিয়াতে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, দুধ অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান। নিয়মিত দুধ পান করলে-

দাঁত ও হাড় মজবুত হয় : দাঁত ও হাড়ের সুরক্ষার জন্য ক্যালসিয়াম অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান। আর দুধে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। তাই নিয়মিত দুধ পান করলে দাঁত ও হাড় ক্ষয় রোধ হয়। পাশাপাশি দাঁত ও হাড় মজবুত হয়।

দৈহিক শক্তি বৃদ্ধি করে : দুধে রয়েছে প্রচুর ক্যালরি, যা আমাদের দেহের শক্তি বৃদ্ধিতে ব্যাপক কাজ করে। প্রতিদিন নিয়মিত এক গ্লাস দুধ পান করলে শরীরের অবসাদ দূর হয় এবং শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি পায়।

ওজন কমাতে দুধ : যারা খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চান, তারা নিয়মিত দুধ পান করতে পারেন। কারণ দুধে রয়েছে প্রচুর ক্যালরি। তবে এতে শর্করার মাত্রা খুবই কম। কাজেই দুধ পান করলে ওজন কমবে প্রাকৃতিকভাবে।

ঘুম ভালো হয় : যারা ইনসমনিয়া বা ঘুম না হওয়ার জটিলতায় ভুগছেন, তারা প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে হালকা গরম দুধ পান করার অভ্যাস করুন। এতে আপনার ঘুম না হওয়ার জটিলতা দূর হবে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে : যারা দীর্ঘদিনের কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন, তারা রাতে ঘুমানোর আগে গরম দুধ পান করুন। ভালো ফল পাবেন।

ক্যালসিয়াম বৃদ্ধি করে : যাদের শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা ঠিক নেই, তারা নিয়মিত দুধ পান করুন। এটি আপনার শরীরের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করবে।

পেশী গঠন করে : দুধে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন। যা মানবদেহের মাংসপেশী গঠনে সহায়তা করে। নিয়মিত ব্যায়ামের পাশাপাশি দিনে দুই গ্লাস দুধ পান করলে মাংসপেশী শক্তিশালী হয়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে : দুধে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল, যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক কাজ করে।

ত্বকের যত্নে দুধ : নিয়মিত দুধ পান করলে ত্বক নরম, কোমল ও মসৃণ হয়।

দুধ কখন খাবেন না

আমাদের দেশে দুধের সঙ্গে অন্য খাবার মিশিয়ে খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। যেমন, দুধ-কলা ভাত, দুধ-ভাত কিংবা আম-দুধ আর চিড়া। এই খাবার গুলো ঐতিহ্যগতভাবে বাঙালি সমাজে মিশে গেছে।

কিন্তু আপনারা কি জানেন, সব খাবারের সঙ্গে দুধ মিশিয়ে খাওয়া ঠিক নয়। কোন খাবারের সঙ্গে দুধ মিশিয়ে খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ তা জানিয়েছে কলকাতার জনপ্রিয় ম্যাগাজিন ‘এই সময়’। তারা বলছে,

দুধ-আম কিংবা দুধ-কলা একসঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া ঠিক নয়। কারণ এতে হজমে সমস্যা হতে পারে। বেড়ে যেতে পারে অ্যাসিডিটি।

এছাড়া দুধ আর মাছ কখনোই একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়। কারণ দুধ ও মাছে প্রায় একই ধরণের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। কাজেই দুটি উপাদান একসঙ্গে খেলে তা মাত্রা অতিক্রম করতে পারে। যা স্বাস্থ্যের পক্ষে ঝুঁকিপূর্ণ।

দুধ ও দধি একসঙ্গে খাওয়া ঠিক না। এই দুটি খাবার একসঙ্গে খেলে ডায়রিয়া ও অ্যাসিডিটির সমস্যা হতে পারে।

দুধ ও তরমুজ একসঙ্গে খেলেও হজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ তরমুজে রয়েছে প্রচুর আঁশ।

পরার্মশ

যারা উচ্চ রক্তচাপ ও অ্যালার্জিজনিত সমস্যায় ভুগছেন, তারা দুধ খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এছাড়া ইউরিক অ্যাসিডের জটিলতা রয়েছে এমন রোগীদের জন্য দুধ খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা মেনে চলা উচিত।

তথ্যসূত্র : ম্যাগাজিন ‘এই সময়’ (কলকাতা), হেলথ লাইন (নিউইয়র্ক), হেলথ নিউজ টুডে (ইউকে) ও উইকিপিডিয়া

 

এবি/এসএন

০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৬:০০পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।