• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কোমল বিষ এনার্জি ড্রিংস

কোমল বিষ এনার্জি ড্রিংস

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

প্রচন্ড গরমে একটু তৃষ্ণা মেটাতে এক চুমুক ঠাণ্ডা কোমল পানীয় বা এনার্জি ড্রিংকস অনেকেই পছন্দ করে। এছাড়া আড্ডা, পার্টি, পিকনিক কিংবা ঘরোয়া আয়োজনে কোমল পানীয় বা এনার্জি ড্রিংস যেন থাকাই চায়। কিন্তু আপনি কি জানেন, কোমল পানীয় বা এনার্জি ড্রিংস কতটা উপকারী?

স্বাস্থ্য ও পুষ্টি গবেষকরা বলছেন, প্রথম দিকে পানি, চিনি, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, লেবুর রস দিয়ে প্রথম এনার্জি ড্রিংস তৈরি করা হতো। তবে বর্তমানে কোমল পানীয় এর উপাদানে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। এতে এখন যোগ করা হয় ক্যাফেইন, অ্যালকোহল এমনকি অপিয়েট। কোমল পানীয়তে থাকা ক্যাফেইন মস্তিষ্ক উত্তেজিত করে। ফলে নিজের মধ্যে ভালো লাগা শুরু হয়। যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

গবেষণায় দেখা গেছে, বাজারে পাওয়া যায় এমন সব কোমল পানীয়তে প্রচুর পরিমাণে চিনি ব্যবহার করা হয়। ফলে এই পানীয় ডায়াবেটিসের উচ্চ ঝুঁকি তৈরি করে। এ ছাড়া এটি কিডনীতে প্রভাব ফেলে। এখানেই শেষ নয়। নিয়মিত কোমল পানীয় পান করার ফলে হৃদপিন্ড, লিভার বা যকৃতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাড়ে ক্যান্সারের ঝুঁকি।

কোমল পানীয় পানের ক্ষতিকর দিক

ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ

আমেরিকান ডায়েট অ্যাসোসিয়েশনের গবেষণা বলছে, নিয়মিত কোমল পানীয় পান করলে টাইপ-টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়। কাজেই খাবার তালিকা থেকে এটি বাদ দেয়া জরুরি।

হজমশক্তি কমায়

গবেষকরা বলছেন, কোমল পানীয় দেহের ‘টোবলিক সিন্ড্রোম’ বা বিপাকীয় প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে ধ্বংস করে দেয়। ফলে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপসহ হজমশক্তি লোপ পায়।

লিভার নষ্ট করে

মার্কিন চিকিৎসা গবেষকরা বলছেন, প্রতিদিন একবার কার্বোনেইটেড পানীয় খাওয়ার ফলে কিডনিতে পাথর হতে পারে। এ ছাড়া এই পানীয় কিডনিতে দীর্ঘমেয়াদি রোগের জন্ম দেয়।

স্থুলতা ও হাড়ের ক্ষয়রোগ

পুষ্টিবিদদের অধিকাংশ মত দিয়েছেন, কোমল পানীয় হাড়ের ঘনত্ব কমিয়ে দেয়। এ ছাড়া এটি স্থুলতা ও হাড়ের ক্ষয়রোগের অন্যতম কারণ।

কোমল পানীয় শরীরে যা করে

⇒ যুক্তরাজ্যভিত্তিক গণমাধ্যমের এক জার্নালে বলা হয়েছে, কোমল পানীয় খাওয়ার ১ ঘন্টা পর এটি শরীরের মধ্যে কি প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। প্রথম চুমুক দেওয়ার পর থেকে ৬০ মিনিট পর্যন্ত মোট ৭টি ধাপে কোমল পানীয় শরীরে বিক্রিয়া করে।

⇒ ৩৩০ মিলিমিটারে একটি কোমল পানীয় এর বোতলে ১০ চা চামচ চিনি থাকে। যা কোমল পানীয় পান করার সঙ্গে সঙ্গে দেহে প্রবেশ করে। কোমল পানীয়তে থাকা এসিড চিনির অতিরিক্ত মিষ্টি স্বাদ হালকা করে দেয়।

⇒ কোমল পানীয় পানের ২০ মিনিট পর শরীরে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। আর ইনসুলিনের বিস্ফোরণ হয়। ফলে লিভারে প্রচুর চিনি জমে।

⇒ এই পানীয়তে থাকা ক্যাসিন সরাসরি শরীরে শোষিত হয়ে যায়। ফলে রক্তচাপ বাড়তে পারে।

⇒ কোমল পানীয়ের প্রতিক্রিয়া মস্তিষ্কের মধ্যে চলে যায়। মাদক ও হিরোইন যেভাবে মস্তিষ্কে কাজ করে, কোমল পানীয়ও ঠিক সেভাবেই কাজ করে।

কোমল পানীয়ের ক্যাফেইনের প্রভাব

কোমল পানীয়তে থাকা ক্যাফেইন আসক্তি তৈরির জন্য দায়ী। প্রায় সব ধরনের কোমল পানীয়তে এই ক্যাফেইন থাকে। ফলে যখনই আমরা কোমল পানীয় পান করি, মস্তিষ্ক ক্যাফেইনের দ্বারা উদ্দীপ্ত হয়। এতে করে একটা নির্দিষ্ট সময় পর মস্তিষ্কের ক্যাফেইনের চাহিদা তৈরি হয়। এতে করে কোমল পানীয়ের প্রতি আসক্তি চলে আসে।

 

তথসূত্র: হেলথ লাইন ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।

১১ মার্চ ২০২৩, ০১:২৬পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।