• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তিলের তেলে শিশু স্বাস্থ্যের চমক

তিলের তেলে শিশু স্বাস্থ্যের চমক

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

প্রাচীনকাল থেকে ভারতীয় উপমহাদেশে তিলের তেলের ব্যবহার প্রচলিত। এই তেলের আয়ুর্বেদিক গুনের কথা কার না জানা? দেহের নানা রকম সমস্যার উপশমে তিলের তেলের জুড়ি মেলা ভার। বিশেষ করে শিশুদের জন্য এই তেল অত্যন্ত উপকারি। শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়মিত তিলের তেল মালিশ করলে তারা নানা শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্ত থাকবে।

যা আছে তিলের তেলে

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ১০০ গ্রাম তিলের তেলে রয়েছে- ক্যালরি- ৫৭৩ কিলোক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট-২৩.৪ মিলিগ্রাম, খাদ্যআঁশ- ১১.৮ মিলিগ্রাম, স্যাচুরেটেড ফ্যাট- ৫৬.৭ মিলিগ্রাম, প্রোটিন-১৭.৭ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৬ ও বি৯-১৯০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন ই- ০.২৫ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম- ৭৫ মিলিগ্রাম, আয়রন- ১৪.৬ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম- ২৯ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম- ৩৫১ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম- ১১ মিলিগ্রাম, জিঙ্ক- ৮ মিলিগ্রাম এবং ফসফরাস ৬২৯ মিলিগ্রাম।

জনপ্রিয় মার্কিন স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবজার্নাল তিলের তেলের উপকারি নানা দিক নিয়ে নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। প্রিয় পাঠক, চলুন দেখে নেয়া তিলের তেলের ৯টি চমকপ্রদ উপকারি দিক।

শিশুর হাড় মজবুত করে: ছোটো শিশুদের দেহে তেল মালিশ অত্যন্ত জরুরি। তিলের তেল যদি ছোট শিশুদের দেহে মালিশ করলে শিশুর হাড় শক্ত হয়। এ ছাড়া শিশুর তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠতে সাহায্য করে তিলের তেল। এই তেল শিশুর ত্বক নরম ও মসৃন করে।

ত্বকের দাগ দূর করে: অনেকের চেহারায় বা ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে যায়। এই সমস্যা দূর করতে নিয়মিত মুখে তিলের তেল মালিশ করতে পারেন। এতে থাকা আন্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ই ও সেসামল আমাদের ত্বকের অবাঞ্ছিত দাগ ও বয়সের দাগ কমিয়ে দেয়।

ব্যাথা উপশম করে: তিলের তেল বহু প্রাচীন কাল থেকেই আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশেষ করে এই তেলে থাকা জিঙ্ক, কালসিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজের মতো উপাদান আমাদের বোন ডেনসিটি কমতে দেয়না। যাদের হাতে পায়ে বাতের ব্যথা হয় তারা নিয়মিত এই তেল মালিশ করলে আরাম পাবেন।

অবসাদ দূর করে: নানা ধরনের চিন্তা ও মানসিক অবসাদ শরীর খারাপের অন্যতম কারণ। কিন্তু নিয়মিত তিলের তেল মালিশ করলে শরীরে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হয়। ফলে এটি মাংসপেশী শিথীল করে। এ ছাড়া দেহকে ঠান্ডা করে সমস্ত ক্লান্তি দূর করে তিলের তেল।

প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন ক্রিম: নিয়মিত তিলের তেলের মালিশ করলে সূর্যের ক্ষতিকর বেগুনী রশ্মি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এতে ত্বক ভালো থাকে। নিয়মিত তিলের তেল মালিশ করলে এটি প্রাকৃতিক সানস্ক্রিনের কাজ করে।

চুল উন্নত করে: চুল পড়ে যাওয়া, খুশকি, রুক্ষ্ম চুল, অকালে চুল পেকে যাওয়া ও ড্রাই স্কাল্পসহ চুলের যাবতীয় সমস্যার সমাধান রয়েছে তিলের তেলে। এসব সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে তিলের তেলের মালিশ অত্যন্ত কার্যকরী। তিলের তেল চুলে কন্ডিশনারের কাজ করে। মাথায় নিয়মিত তিলের তেলের মালিশ স্কাল্পের রক্ত চলাচল বাড়িয়ে তোলে। ফলত আপনার চুল পড়া ও খুশকির প্রকোপ কমে।

যেভাবে চুলে ব্যবহার করবেন তিলের তেল

→ তিন টেবিল চামচ তিলের তেলের সঙ্গে ১ চা চামচ মধু মেশান। মিশ্রণটি আঙুলের সাহায্যে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ভালো করে লাগিয়ে গরম তোয়ালে জড়িয়ে রাখুন মাথায়। ৪০ মিনিট অপেক্ষা করে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।

→ সমপরিমাণ তিলের তেল ও নারকেল তেল একসঙ্গে মিশিয়ে চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ম্যাসাজ করুন। গরম পানিতে তোয়ালে ডুবিয়ে চুল জড়িয়ে রাখুন। ৪০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে প্রাকৃতিক কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।

→ ২ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে পরিমাণ মতো তিলের তেল মিশিয়ে হালকা গরম করে নিন। মিশ্রণটি চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করে ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

→ ২ টেবিল চামচ তিলের তেলের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ টক দই ওয়াধা চা চামচ হলুদ গুঁড়া মেশান। মিশ্রণটি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে শাওয়ার ক্যাপ পরে নিন। আধা ঘণ্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

→ ২ টেবিল চামচ তিলের তেলের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ আদার রস মেশান। মিশ্রণটি চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ভালো করে লাগিয়ে অপেক্ষা করুন। আধা ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে নিন।

→ সমপরিমাণ তিলের তেল ও ক্যাস্টর অয়েল চুলের গোড়ায় লাগান। কিছুক্ষণ পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

তথ্যসূত্র: হেলথ লাইন ও বোল্ড স্কাই।

২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৬:১৬পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।