• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শাপলা ফুলের অভাবনীয় পুষ্টিগুণ

শাপলা ফুলের অভাবনীয় পুষ্টিগুণ

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

শাপলা। বাংলাদেশের জাতীয় ফুল সাদা শাপলা। বর্ষাকালে দেশের খাল-বিলে প্রচুর শাপলা ফুঁটে। খয়েরি ও বাদামি শাপলাও আমাদের দেশে প্রচুর জন্মে। এছাড়া শ্রীলঙ্কা ও ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশেও শাপলা পাওয়া যায়। প্রাচীন মিসরেও সাদা ও নীল শাপলার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।

আমাদের জাতীয় ফুল হলেও শাপলা বেশ অবহেলিত। যদিও ফুল হিসেবে এটি যেমন দৃষ্টিনন্দন, তেমনি এটি খাবার হিসেবেও জনপ্রিয়। শাপলা ফুলের লতি আমাদের দেশে ভাজি ও তরকারি হিসেবে খাওয়ার ঐতিহ্যবাহী প্রচলন রয়েছে।

আজকের পর্বে খাবার হিসেবে শাপলার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। চলুন, দেখে নিই-

পরিচয়

পৃথিবীতে প্রায় ৫০-৬০ প্রজাতির শাপলা রয়েছে। আমাদের দেশে সাদা শাপলা (Nymphaea alba, Nymphaea pubiscence), লাল শাপলা (Nymphaea rubra) ও হালকা নীল শাপলা Nymphaea nouchali ও Nymphaea capensis দেখা যায়। দুর্লভ হলুদাভ শাপলাও (Nymphaea amazonum) মাঝে মাঝে কোথা কোথাও দেখা যায়। সবচেয়ে বেশি দেখা যায় সাদা শাপলা।

এটি একটি জলজ বিরুৎ। একবার কোথাও জন্মালে তার মূল সম্পূর্ণ না উঠানো পর্যন্ত সেখানে গাছ জন্মাতেই থাকে। গাছের কন্দ বা মোথা জলের তলে মাটি বা কাদায় থাকে, পাতা জলের উপরে ভাসতে থাকে। জল পেলে পত্রনাল ২-৩ মিটার লম্বা হতে পারে।

শাপলা ফুল দেখতে অনেকটা পদ্মফুলের মতো। বর্ষাকালে শাপলা ফুঁটতে শুরু করলেও এটি শরতের প্রথম দিকে বেশি দেখা যায়। শাপলার ফলগুলো স্পঞ্জের মতো ফাঁপা, সবুজ ও গোলাকার। এগুলো নানাভাবে খাওয়া যায়।

পুষ্টিগুণ
শাপলা গাছের বিভিন্ন অংশের পুষ্টিমান বিভিন্ন রকম। জলীয় উপাদান সবচেয়ে বেশি থাকে মোথা বা কন্দে। এই অংশে ২০.৪ শতাংশ পানি। জলীয় অংশ সবচেয়ে কম থাকে বীজে। বীজে সবচেয়ে বেশি থাকে ফ্যাট। শাপলা পাতায় প্রোটিন রয়েছে ২৫.৪ শতাংশ। শাপলার নাইলে প্রোটিন রয়েছে ১০.০ শতাংশ। এতে খাদ্যআঁশ রয়েছে প্রায় ১৫.১% শতাংশ।
খনিজ উপাদানের মধ্যে শাপলার নাইলে রয়েছে পটাশিয়াম ৪.৬৩ শতাংশ, সোডিয়াম ৪.২১ শতাংশ। এছাড়া এতে রয়েছে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম, জিংক ও আয়রন।

প্রতি ১০০ গ্রাম শাপলার লতায় রয়েছে

খনিজ পদার্থ ১.৩ গ্রাম
আঁশ ১.১ গ্রাম
খাদ্যশক্তি ১৪২ কিলো
প্রোটিন ৩.১ গ্রাম
শর্করা ৩১.৭ গ্রাম এবং
ক্যালসিয়াম-৭৬ মিলিগ্রাম।

উপকারিতা

কলেরা নিরাময় : ভেষজ চিকিৎসায় শাপলা ফুলের গুঁড়ো বেশ উপকারী। এটি প্রাচীনকাল থেকে ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে আসছে।

জ্বর ও যকৃতের রোগ নিরাময়: জ্বর সারাতে ও যকৃতের রোগ নিরাময়ে শাপলা ফুলের গুঁড়া অত্যন্ত কার্যকরী।

চর্ম ও কুষ্ঠ রোগ দূর করে : শাপলার বীজ বিভিন্ন চর্মরোগ, এমনকি কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে থাকে।

হজমশক্তি বৃদ্ধি : অজীর্ণ ভাব দূর করতে ও হজমশক্তি বাড়াতে শাপলা মোথা বা মূল বেশ কার্যকরী। এটি গবেষণায় প্রমাণিত।

অ্যালার্জি ও রক্ত আমাশয় : লাল শাপলা অ্যালার্জি ও রক্ত আমাশয় নিরাময়ে দারুণ কার্যকরী। এছাড়া এটি এসিডিটি, অ্যানেসথেসিক, সেরোটিক, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগ নিরাময়েও ব্যবহার হয়ে থাকে।

ক্যান্সার প্রতিরোধী : শাপলাতে থাকা গ্যালিক এসিড এনজাইম ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।

রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় : এতে রয়েছে ফ্লেভনল গ্লাসাইকোসাইড। যা রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে মাথা ঠান্ডা রাখে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে : শাপলা ফুল ইনসুলিনের স্তর স্থিতিশীল রেখে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

তথ্যসূত্র : এআইএস ডট গভ ডট বিডি এবং উইকিপিডিয়া

 

এবি/এসএন

২৫ আগস্ট ২০২১, ০৫:০৫পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।