• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘গুণ গেয়ে শেষ হবে না, নাম যে তার পুদিনা’

‘গুণ গেয়ে শেষ হবে না, নাম যে তার পুদিনা’

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

প্রকৃতিতে রয়েছে মানুষের জন্য উপকারি নানা ভেষজ উপাদান। কোনো উদ্ভিদের ছাল, কোনোটির শিকড় আবার কোনো উদ্ভদের ফুল-ফলের রয়েছে রোগের প্রতিষেধক। তেমনই একটি গুণে ভরা পাতার নাম ‘পুদিনা পাতা’। ভেষজগুণে ভরপুর পুদিনা পাতা চায়ের সঙ্গে খাওয়ার প্রচলন বেশি।

ভারতীয় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “পুদিনা পাতায় রয়েছে ‘পলিফেনল’। যা একে ওষুধিগুণে সেরা করে তুলেছে।”

আর তাই আমাদের এবারের পর্বে পুদিনা পাতার নানা পুষ্টিগুণ সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

পরিচয়

পুদিনা পাতার বোটানিক্যাল নাম Menth spicata। এর ইংরেজি নাম Mint। দারুণ সুগন্ধির কারণে এটি বিভিন্ন মুখরোচক খাবার, যেমন কাবাব, সালাদ, বোরহানি ও চাটনি তৈরিতে ব্যবহার হয়। কাঁচা পুদিনা সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় চাটনি ও সালাদে। ইউরোপের দেশগুলোতে ভেড়ার মাংসের রোস্ট ও মিন্ট জেলি তৈরিতে পুদিনা পাতার ব্যবহার সবচেয়ে বেশি।

পুষ্টি উপাদান

হাঁপানি ও পেটের সমস্যা দূর করতে পুদিনা পাতা বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে। এতে রয়েছে স্বল্প মাত্রায় ক্যালরি, প্রোটিন ও চর্বি। তবে ভিটামিন এ, সি এবং ভিটামিন বি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে পুদিনা পাতায়। এছাড়া আয়রন, পটাসিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজের দারুণ এক উপস্থিতি রয়েছে পুদিনায়।

উপকারিতা

হজমে সহায়ক : পুদিনা পাতায় রয়েছে প্রচুর ‘অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’, ‘মেন্থল’ এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট’। যা হজমশক্তি বাড়াতে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী। এতে যে এনজাইম রয়েছে তা পাকস্থলীকে শীতল রাখে ও ক্ষতিকর জীবাণু ধ্বংস করে।

হাঁপানি নিরাময় : যারা পুরনো হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছেন, তারা নিয়মিত পুদিনা পাতা খাওয়ার অভ্যাস করুন। এটি বুকে জমে থাকা কফ দূর করতে সহায়তা করে। পুদিনা পাতায় থাকা মেন্থলের নির্যাস ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ফুসফুসে মিউকাস আটকে গেলে হাঁপানি রোগের সৃষ্টি হয়। কিন্তু আপনি কি জানেন, ফুসফুজে আটকে যাওয়া মিউকাস ছাড়াতে পুদিনা পাতা খুবই কার্যকরী।

মানসিক অবসাদ দূর করে : পুদিনা পাতা সুগন্ধিযুক্ত একটি পত্র। এর সুগন্ধি মানসিক অবসাদ দূর করে এবং মনের ওপর থেকে চাপ কমাতে সহায়তা করে।

হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে : রক্তে ‘কর্টিসল’ হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পুদিনা পাতা খুবই কার্যকরি। জৈবিক মানসিক চাপ সামাল দেওয়ার জন্য এটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। যা গবেষণায় প্রমাণিত।

মাথা ব্যথা নিরাময় : পুদিনা পাতায় থাকা ‘মেন্থল’ পেশি শিথিল রাখে। ফলে মাথা ব্যথার উপশম হয়। পুদিনা পাতার নির্যাস থেকে তৈরি পেস্ট বা মলম নিয়মিত কপালে ও মাথায় ব্যবহার করলে মাথা ব্যথা উপশম হয়।

ত্বকের স্বাস্থ্য সুরক্ষা : ত্বকের যে কোনা প্রদাহ সারাতে পুদিনা কার্যকরি। ব্যাকটেরিয়ানাশক উপাদান থাকায় এটি ত্বকের বলিরেখা, কালোদাগ ও ত্বক কুঁচকে যাওয়া রোধ করে। কারণ এতে রয়েছে উচ্চমাত্রায় ‘স্যালিসাইলিক অ্যাসিড’।

দাঁত ও মাড়ির যত্নে : অনেকের মুখে দুর্গন্ধ হয়। এই দুর্গন্ধ দূর করার আদর্শ উপাদান পুদিনা পাতা। এর নির্যাস সমৃদ্ধ ‘মাউথওয়াশ’ মুখের ভেতরের জীবাণু ধ্বংস করে। ফলে দাঁত ও মাড়ি সুস্থ থাকে।

ওজন কমায় : যারা ওজন কমাতে চান, তারা নিয়মিত পুদিনা পাতা চায়ের মতো করে খেতে পারেন। এতে থাকা অ্যাসেন্সিয়াল অয়েল আপনার অতিরিক্ত মেদ চর্বি গলিয়ে ওজন কমাতে সহায়তা করবে।

স্মরণশক্তি বাড়ায় : মস্তিষ্কের ধারণক্ষমতা ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে পুদিনা পাতার জুড়ি মেলা ভার। এটি নিয়মিত খেলে উপস্থিত জ্ঞানও বাড়ে, সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পায় স্মৃতিশক্তি।

সংক্রমণ রোধ করে : বিভিন্ন ধরণের মৌসুমি রোগ, যেমন জ্বর, ঠাণ্ডা, কাশি সারাতে পুদিনা পাতা কার্যকরি। এতে রয়েছে ‘ভেপর রাব’ ও ‘ইনহেরার’ উপাদান। যা সাধারণ সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়।

তথ্যসূত্র : হেলথবিডি ডট কম, এআইএস ডট গভ ডট বিডি ও উইকিপিডিয়া

 

এবি/এসএন

২৩ আগস্ট ২০২১, ০৭:৩৯পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।