• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সর্দি-কাশি কফ: প্রাকৃতিক উপাদানে ঘরোয়া নিরাময়

সর্দি-কাশি কফ: প্রাকৃতিক উপাদানে ঘরোয়া নিরাময়

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

বছর ঘুরে আবার এসেছে শীত। দেশের উত্তরাঞ্চলে এরই মধ্যে শীতের তীব্রতা শুরু হয়েছে। গ্রামীণ জনপদেও ঠাণ্ডা হাওয়ার দখলে প্রকৃতি। শীত এলেই সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। বয়স্ক ও শিশুদের জন্য শীতের সময়টা বেশ স্পর্শকাতর। সাধারণ সর্দি-কাশি ও জ্বর অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয়।

তবে শীতের সুষ্ক আবহাওয়ার মাঝেও সুস্থ থাকা সম্ভব। সচেতনতা ও বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করলে সাধারণ সংক্রমণ দূরে রাখা যায়। তারপরেও যদি সর্দি-কাশি বা জ্বরে কেউ আক্রান্ত হন, তাহলে সুস্থতার জন্য নিজেই নিজের পথ তৈরি করতে পারেন।

লাইফস্টাইল ও স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতের সময় সর্দি-কাশি হলে নিজেরা ঘরে বসেই নিরাময় করার মতো উপাদান তৈরি করে নেয়া যায়। প্রাকৃতিক উপাদানগুলোর যথাযথ ব্যবহার শীতের সর্দি-কাশি ও জ্বর থেকে সুরক্ষা দিতে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী।

সর্দি-কাশি ও কফ দূর করার ঘরোয়া উপায়

জনপ্রিয় মার্কিন স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবজার্নাল হেলথ লাইন, মেডিকেল নিউজ টুডে ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার পৃথক নিবন্ধে বলা হয়েছে, ঠাণ্ডাজনিত সর্দি-কাশি, কফ ও জ্বর নিরাময়ে প্রাকৃতিক উপাদান সবচেয়ে কার্যকরী। এসব উপাদানগুলোর সঠিক ব্যবহার জানা জরুরি। যেমন-

আদা: গবেষকরা বলছেন, সর্দি ও কফ দূর করার জন্য এক টেবিল চামচ আদা কুচি এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে ৫-১০ মিনিট ফুটিয়ে নিতে হবে। ফুটানোর সময় গ্লাস বা পানির পাত্রটি অবশ্যই ঢেকে রাখতে হবে। ফুটানো পানি ঠাণ্ডা করে দিনে অন্তত তিনবার পান করলে সর্দি-কাশি ও কফ থেকে নিরাময় পাওয়া যাবে।

গোলমরিচ: এক চা চামচ আদা কুচি, গোলমরিচের গুঁড়ো এবং লবঙ্গের গুঁড়ো দুধ বা মধুর সঙ্গে মিশিয়ে মিশ্রণটি দিনে তিনবার পান করা যেতে পারে। এই পানীয়টি বুকের কফ বা শ্লেষ্মা শরীর থেকে বের করে দিতে সাহায্য করে।

লেবু-মধু: এক গ্লাস পানিতে লেবুর রস ও এক চামচ মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন। গবেষণায় দেখা গেছে, মধু শ্বাসযন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সহায়তা করে। এমনকি এটি বুক থেকে কফ দূর করতেও কার্যকরী।

লবণ মিশ্রিত পানি: সর্দি ও কফ দূর করতে সবচেয়ে সহজ উপায় হল লবণ পানি। লবণ শ্বাসযন্ত্র থেকে কফ দূর করতে ব্যাপক কার্যকরী। এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক চা চামচ লবণ মিশিয়ে নিন। এই পানি দিয়ে দিনে দুই তিনবার গারগেল বা কুলকুচি করুন। উপকার পাবেন।

আপেল সাইডার ভিনেগার: এক কাপ সামান্য গরম পানিতে দুই চা চামচ আপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে নিন। এর সঙ্গে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে এই পানীয়টি দিনে অন্তত দুই-তিনবার পান করুন। উপকার পাবেন।

হলুদ গুঁড়ো: গবেষকরা বলছেন, হলুদে রয়েছে কারকুমিন নামের উপাদান, যা বুকের ভেতরে জমে থাকা কফ দূর করে। এছাড়া হলুদ মিশ্রিত পানি খেলে বুকের ব্যথা, শ্বাসকষ্ট দ্রুত নিরাময় হয়। এক্ষেত্রে কুসুম গরম বা হালকা গরম পানিতে এক চিমটি হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে নিতে পারেন।

পেঁয়াজ রস: পেঁয়াজের রস, লেবুর রস, মধু ও পানি একসঙ্গে মিশিয়ে ৫-৭ মিনিট ফুটিয়ে নিয়ে সেই পানি পান করুন। তবে পানীয়টি পান করার আগে কুসুম গরম করে নিবেন। দিনে তিন থেকে চারবার ব্যবহার করুন।

তরল খাবার: বুকে কফ জমে থাকার কারণে খাবার গ্রহণে অনেকেই কষ্টে ভুগেন। তাই বুকে কফ জমে থাকাকালীন বেশি করে তরল এবং গরম খাবার খান। এতে আরাম পাওয়া যায়। সারাদিন প্রচুর পানি, জুস, মুরগী ও সবজির স্যুপ বা তুলসী পাতার চা পান করুন। উপকার পাবেন।

উপকারী টোটকা

সর্দি-কাশি ও বুকের কফ দূর করতে ফুটন্ত গরম পানিতে মেন্থল দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। চুলা থেকে পানি নামিয়ে একটি বড় তোয়ালে দিয়ে মাথা ঢেকে নিন এবং ঘন ঘন শ্বাস নিন। এভাবে অন্তত ১০ মিনিট করে দিনে ২ বার ভাপ নিন। এতে বন্ধ থাকা নাক খুলে যাবে, দূর হবে বুকে জমে থাকা কফ। এ ছাড়া গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করলে সর্দি ও কফজনিত গলা ব্যথা কমে যায়।

 

তথ্যসূত্র: হেলথ লাইন, মেডিকেল নিউজ টুডে ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।

০৭ নভেম্বর ২০২২, ০৫:২৫পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।