• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

স্যাঁতসেঁতে বর্ষায় শিশুর যত্ন যেমন হবে

স্যাঁতসেঁতে বর্ষায় শিশুর যত্ন যেমন হবে

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

দেরিতে হলেও বর্ষাকালের বৃষ্টি শুরু হয়েছে দেশে। বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েকদিন ধরেই বৃষ্টি হচ্ছে। তবে, বৃষ্টির সঙ্গে ভ্যাপসা গরমও আছে। এমন নাজেহাল আবহাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য মোটেই উপযোগী নয়। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের জন্য গরম-বৃষ্টির এই মিশেল আবহাওয়া বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। বৈশ্বিক জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে প্রকৃতির পটপরিবর্তন ঘটেছে। যার প্রভাবে ঠাণ্ডা-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।

তাই, এমন প্রতিকূল আবহাওয়ায় শিশু ও বয়স্কদের প্রতি বাড়তি যত্ন প্রয়োজন। বিশেষ করে শিশুদের সুস্থতার জন্য ভ্যাপসা গরম ও বৃষ্টির স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে বাড়তি খেয়াল রাখতে হবে। এই সময় শিশুর পরিচ্ছন্নতা, পোশাকের ধরন, খাদ্যাভ্যাস ও নিত্যদিনের যত্নে কিছু পরিবর্তন আনাও জরুরি।

শিশুর সুস্থতায় যা করবেন

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম গার্ডিয়ান ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার স্বাস্থ্যবিষয়ক নিবন্ধে বলা হয়েছে, বর্ষায় শিশু নানা রকম শারীরিক সমস্যায় পড়তে পারে। জ¦র, ঠাণ্ডা ও কাশিতে আক্রান্ত হলে শিশুর অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ে। তাই, বর্ষায় শিশুর বিশেষ যত্ন প্রয়োজন। যেমন-

বিশুদ্ধ পানি: বর্ষাকালে শিশুরা পানি পান করতে চায় না। তারপরও শিশুকে অবশ্যই বিশুদ্ধ পানি পান করাতে হবে।

খোলা খাবার পরিহার: বর্ষার সময় প্রকৃতি ঠাণ্ডা থাকে। এই সময় মুখোরচক বাইরের খাবারের প্রতি সবার ঝোঁক বাড়ে। কিন্তু কোনো ভাবেই শিশুকে বাইরের খোলা খাবার খাওয়ানো যাবে না।

ঘাম পরিষ্কার রাখুন: বৃষ্টির মাঝে মাঝে ভ্যাপসা গরম পড়ে বছরের এই সময়ে। তাই, আপনার শিশু গরমে ঘেমে যাচ্ছে কিনা খেয়াল রাখুন। ঘেমে গেলে শিশুর ঘাম নরম কাপড় দিয়ে মুছে দিন। প্রয়োজনে পোশাক বদলে দিন।

বৃষ্টির পানি: আপনার শিশু যেন বৃষ্টির পানিতে না ভেজে সেদিকে খেয়াল রাখুন। কোনো কারণে যদি শিশু বৃষ্টির পানিতে ভিজে যায়, তাহলে দ্রুত তার শরীর মুছে ফেলুন।

ডায়াপার পরিহার করুন: গরম ও বৃষ্টির কারণে একটা ভ্যাপসা অবস্থা এখন প্রকৃতিতে। তাই, আপনার শিশুকে ডায়াপার পরাবেন না। বিশেষ প্রয়োজনে ডায়াপার পরালেও তা যেন সীমিত সময়ের জন্য হয়। অনেকেই দীর্ঘক্ষণ ডায়াপার পরিয়ে রাখেন, এটা শিশুর দেহে র‌্যাশ তৈরি করতে পারে। ডায়াপার খুলে ফেলার পর শিশুর কুচকি ও উরুতে পাউডার লাগাতে পারেন।

স্যাঁতসেঁতে জায়গা এড়িয়ে চলুন: বাসায় যেই ঘরটি বেশি স্যাঁতসেঁতে ও আলো-বাতাস কম, সেরকম ঘরে শিশুকে রাখবেন না। শিশুর ঘর অবশ্যই শুষ্ক ও পরিচ্ছন্ন হতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যে, শিশুর ঘরে যেন বেশি শব্দ ও ধুলাবালি না আসে।

এসি নিয়ন্ত্রণ করুন: গরম থেকে বাঁচতে অনেকেই এসি বা শীতাতপ যন্ত্র ব্যবহার করেন। কিন্তু মনে রাখবেন, শিশু যেই ঘরে অবস্থান করে, সেই ঘরের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যেন বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে। তাপমাত্রার অতিরিক্ত তারতম্য শিশুর জন্য হিতে বিপরীত হতে পারে।

মশারি লাগান: বর্ষায় মশা ও পোকা মাকড়ের উপদ্রব বেড়ে যায়। তাই, দিনে কিংবা রাতে শিশুকে সব সময় মশারির ভেতরে ঘুম পাড়ান। মশার কয়েক জ¦ালাবেন না। প্রয়োজনে উন্নতমানের মশা নিরোধক জেল (গুডনাইট) ব্যবহার করতে পারেন।

বর্ষায় শিশুর পোশাক

গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক নিবন্ধে ঢাকার গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের বস্ত্র পরিচ্ছদ ও বয়নশিল্প বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদা আক্তার বলেছেন-

⇒ শিশুকে বর্ষাকালে অবশ্যই সূতি কাপড় পরাতে হবে। কারণ, সুতি কাপড় সহজেই পরিষ্কার করা যায়। সুতি কাপড়ের পোশাক নরম ও আরামদায়ক। এই কাপড় শিশুর দেহের তাপমাত্রা ঠিক রাখে।

⇒ নবজাতকের জন্য হাতকাটা জামা ভালো। কারণ জামার ভাঁজে ঘাম জমে র‌্যাশ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। হামাগুড়ি দিচ্ছে এমন বাচ্চার জন্য একছাঁটের পোশাক ব্যবহার করতে পারেন।

⇒ যেসব শিশুরা স্কুলে যায়, এমন শিশুদের পোশাক রাবারের ইলাস্টিকযুক্ত হওয়া ভালো। প্যান্টে হুক বা চেইন শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

⇒ আপনার শিশুকে সব সময় শুকনো কাপড় পরান। কোনো ভাবেই শিশুকে আধো ভেজা কাপড় পরাবেন না। ভারি জিনস ও গ্যাবাডিন কাপড়ের পোশাক পরিহার করুন।

 

তথ্যসূত্র: গার্ডিয়ান ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।

০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৮:৪৮পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।