• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পেটের মেদ কমানোর উপায় আপনার হাতেই

পেটের মেদ কমানোর উপায় আপনার হাতেই

প্রতিকী ছবি

স্বাস্থ্য ডেস্ক

সুস্থ দেহ দেয় সুন্দর মন। সুস্থতার জন্য মানুষ কত কিছুই না করে। কিন্তু তারপরও আমরা অসুস্থ হই। দেহের সৌন্দর্য ধরে রাখতেও আমরা কত কিছুই না করি, তার পরও আমরা ব্যর্থ হই। শরীর ফিট তো পৃথিবী ঠিক। আপনি কতটুকু সুস্থ তা আপনার শারীরিক গঠনেই প্রকাশ পায়। দেহের থুলথুলে মাংসপেশী ও চর্বিযুক্ত পেট অসুস্থ মানুষের এক নিদর্র্শন।

অপরিকল্পিত জীবনধারার কারণে অনেকের পেটেই মেদ জমে। থুলথুলে ভুড়ি ঝুলে পড়ে। তবে একবার পেটে মেদ জমলে সেটা কাটিয়ে ওঠা যাবে না, এ ধারণাও ভুল। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে অভ্যস্থ হলে সহজে মেদ কমিয়ে ফেলা সম্ভব।

যেসব খাবারে বাড়ে পেটের মেদ

জানা জরুরি যে, কোন কোন ধরনের খাবারের কারণে পেটে মেদ জমতে থাকে। সাধারণত মদ্যপান, মিষ্টিজাতীয় খাবার অতিরিক্ত গ্রহণ, ডুবো তেলে ভাজা খাবার, কোমল পানীয়, অস্বাস্থ্যকর বাইরের খাবার, নিয়মিত লাল মাংস (রেড মিট) খাওয়া, স্যাচুরেটেড চর্বি গ্রহণ ইত্যাদি পেটের মেদ বাড়িয়ে তোলার পেছনে ভূমিকা রাখে। ওয়ের্ক ফোর্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমনটিই বলেছেন।

গবেষকরা বলছেন, যখন একই তেল বারবার ব্যবহার করা হয়, তখন সেখানে ট্রান্সফ্যাট উৎপন্ন হয়। ট্রান্সফ্যাট পেটের মেদ বাড়িয়ে দেয়। পেটের মেদ অতিরিক্ত জমে যাওয়ার আগেই সেটিকে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।

পেটের মেদ ও ভুঁড়ি থেকে মুক্তির উপায়

জনপ্রিয় মার্কিন স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েব জার্নাল হেলথ লাইন ও মেডিকেল নিউজ টুডে’র পৃথক নিবন্ধে বলা হয়েছে, পেটের মেদ ও ভুঁড়ি কমাতে-

ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার: খাদ্যতালিকায় ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার বেশি রাখতে হবে। লাল চাল বা লাল আটার তৈরি খাবার এবং শাকসবজি ও ফলমূলজাতীয় খাবার হতে পারে আদর্শ।

গ্রিন-টি: এতে আছে প্রচুর অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, যা পেটের মেদ কমাতে খুব বেশি কার্যকর। তাই দুধ ও চিনি বেশি দিয়ে চা পানের অভ্যাস বদলে গ্রিন-টি খাওয়ার অভ্যাস করুন।

ওমেগা-৩: আখরোট, কাঠবাদাম ও সামুদ্রিক মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের উৎস। তাই এসব খাবার পেটের মেদ কমাতে কার্যকর।

ঝাল খাবার খান: প্রতিনিয়ত পরিমিত ঝাল খাবার খান। এতে পেটের মেদ কমে যাবে। অবাক হওয়ার মত কথা হলেও এটাই সত্য। উপকারী ঝালের স্বাদ পেতে দারুচিনি, আদা, গোলমরিচ এবং কাঁচামরিচ খেতে পারেন।

রসুন: কাঁচা রসুনের কয়েক কোয়া সকালবেলা চুষে খান। এই অভ্যাসের ফলে দ্রুত আপনার ওজন কমবে আর পেটের মেদ ঝরবে। কাঁচা রসুন শরীরের রক্তপ্রবাহ সহজ করে। পেটে মেদ জমতে দেয় না।

গরম পানি: প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন। এতে শরীরের হজমপ্রক্রিয়া ভালো থাকবে এবং শরীরে মেদ জমার প্রক্রিয়া ধীর হবে।

উদ্বেগ কমান: অতিরিক্ত চিন্তা ও উদ্বেগ কমিয়ে ফেলুন। মানসিক অস্থিরতা দেহের হজমপ্রক্রিয়ার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। কাজেই সুস্থ দেহ পেতে অবশ্যই চিন্তামুক্ত জীবনযাপন করতে হবে।

কিছু অভ্যাস বদলান

স্বাস্থ্য গবেষক ও শরীরচর্চাবিদরা বলছেন, পেটের মেদ কমানোর জন্য খাদ্যাভ্যাস বদলানোর পাশাপাশি দৈনন্দিন কাজেও কিছু পরিবর্তন আনা জরুরি। যেমন-

অনেকেই খাবার খাওয়ার পর বসে থাকেন বা শুয়ে পড়েন। তাদের খাবার সঠিকভাবে পরিপাক হয় না, ফলে পেটে চর্বি জমতে থাকে। সে জন্য খাবার খাওয়ার পর একটানা শুয়ে-বসে না থেকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করা উচিত।

যারা সারা দিন টেবিল চেয়ারে বসে কাজ করতে হয়, তাদের পেটে সহজে মেদ জমে। তাই চেয়ারে বসে কাজের ফাকে ফাকে ৩০-৪০ মিনিট পরপর উঠে একটু হাটাহাটি করে নিন।

একবারে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ না করে অল্প অল্প করে বারবার খাবার গ্রহণ করুন। সারা দিনের অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টার খাবারকে ৫-৬ বারে গ্রহণ করুন। সেখানে তিনবার প্রধান খাবার ও দুই-তিনবার নাশতাজাতীয় খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন।

ভোরে ঘুম থেকে উঠুন। এরপর হাঁটুন অথবা দৌড়ান। পারলে সাইকেলও চালাতে পারেন। পায়ের ওপর চাপ পরলেই আস্তে আস্তে কমতে থাকবে উরু।

সারাদিন বসে থেকে কাজ না করে, সময় পেলেই কিছুটা হাঁটাহাটি করুন। এছাড়া হাতে সময় করে রিক্সায় না চেপে বরং হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছান।

ধীরে ধীরে দৌড়ানোর অভ্যাস করুন। এতে মেদ ঝরবে দ্রুত। জোড়ে দৌড়ালে দম খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়, এর ফলে বেশিক্ষণ দৌড়ানো সম্ভব হয় না।

প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে। পানি খাওয়ার ফলে শরীরের অতিরিক্ত টক্সিন বেরিয়ে যায়। যার ফলে মেদ জমতে পারে না।

 

তথ্যসূত্র: হেলথ লাইন, মেডিকেল নিউজ টুডে ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

৩০ আগস্ট ২০২২, ০৬:৪২পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।