• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

অসহনীয় কোষ্ঠকাঠিন্য: নিরাময় আপনার হাতেই

অসহনীয় কোষ্ঠকাঠিন্য: নিরাময় আপনার হাতেই

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

দিন দিন কোষ্ঠকাঠিন্য একটি অসহ্য যন্ত্রণাদায়ক রোগে পরিণত হচ্ছে। দেশের লাখ লাখ মানুষ এই সমস্যায় ভুগছেন। অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসের কারণেই কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি বাড়ে। বর্তমানে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগটি সব বয়সের মানুষের মাঝেই দেখা যাচ্ছে। কোষ্ঠকাঠিন্য মারাত্মক রোগ না হলেও চিকিৎসার অভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে।

তাই, কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ে অবহেলা নয়। যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন, তারা এখনই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তবে আপনি চাইলে নিজেও নিজের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন।

কিভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন কোষ্ঠকাঠিন্য

জনপ্রিয় স্বাস্থ্যবিষয়ক মার্কিন ওয়েব জার্নাল হেলথ লাইন, মেডিকেল নিউজ টুডে ও জি নিউজে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে আঁশযুক্ত খাবারের বিকল্প নেই। তাই খাদ্য তালিকায় রাখুন-

কলা: কলা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা হজমশক্তি বাড়িয়ে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে।

কলমি শাক: কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে কলমি শাক। কলমি শাকের পাতা ও কাণ্ডে পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশ থাকে। এই আঁশ খাদ্য পরিপাকে সহায়তা করে। কলমি শাক খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং শরীর সুস্থ থাকে।

গাজর: গাজর একটি পরিচিত সবজি। এই সবজিটি অনেকেরই পছন্দ। প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় গাজর রাখুন। গাজরে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে বিশেষ ভাবে কার্যকরী।

শসা: শসার খাদ্যআঁশ বা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ের মহৌষধ। কারণ শসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জলীয় অংশ। তাই, নিয়মিত শসা খেলে দূর হবে কোষ্ঠকাঠিন্য।

পেয়ারা: কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এবং দ্রুত ওজন কমাতে পেয়ারা খেতে পারেন নিয়মিত। পেয়ারাই থাকা খাদ্যআঁশ ও ভিটামিন সি পেটের সমস্যা দূর করে।

ঘরোয়া কয়েকটি উপায়

অপরিকল্পিত ও অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাসের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয়। তবে এই সমস্যা কিছুটা বংশানুক্রমিকও বটে। কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনার পাশাপাশি আরও কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত। এতে দ্রুত কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্ত হওয়া যায়। যেমন-

লেবু: কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে লেবু বা লেবুর রস খুবই কার্যকরী। এক গ্লাস গরম পানিতে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এর সঙ্গে আধা চা চামচ নুন এবং সামান্য মধু মিশিয়ে নিতে পারেন। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এটা পান করুন। কোষ্ঠকাঠিন্য পালাবে।

মধু: কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে মধু অত্যন্ত কার্যকরী একটি প্রাকৃতিক উপাদান। দিনে তিনবার দুই চা চামচ করে মধু খান। প্রয়োজনে মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে পানিতে গুলিয়ে সরবতের মতোও পান করতে পারেন।

আঙ্গুর: প্রতিদিন অর্ধেক বাটি আঙ্গুর বা আধা গ্লাস আঙ্গুরের রস পান করুন। যদি বাড়িতে আঙ্গুর না থাকে বা আঙ্গুর খেতে ভাল না লাগে, তাহলে দু চামচ কিশমিশ পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালে কিশমিশসহ ওই পানি পান করুন। প্রতিদিন সকালে এভাবে কিশমিশ খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।

পালং শাক: আপনি যদি কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগে থাকেন, তাহলে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পালং শাক রাখুন। এটি হজম শক্তি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে। আপনি চাইলে এটি সালাদের মতো করেও খেতে পারেন বা রান্না করেও খেতে পারেন।

ক্যাস্টর অয়েল: শুধু ত্বক বা চুলের যত্নে এই তেল ব্যবহার হয় না। এই তেল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও কার্যকরী। সকালে খালি পেটে এক বা দুই চা চামচ ক্যাস্টর অয়েল খান। এই তেল ফলের রসের সঙ্গে মিশিয়েও খাওয়া যায়।

গরম পানি: সকালে খালি পেটে এবং রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস কুসুম গরম পানি পান করুন। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় হবে। হজমশক্তি বাড়বে।

গরম দুধ: রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস গরম দুধ পান করুন। গরম দুধ হজমশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। আপনার হজমশক্তি যত উন্নত হবে, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা তত দূরে যাবে।

সতর্কতা: যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তারা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মধু খাবেন না। আপনারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এ ছাড়া যারা কিডনি, লিভারসহ অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্ত তারা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করার জন্য চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হোন।

 

তথ্যসূত্র: হেলথ লাইন, মেডিকেল নিউজ টুডে ও জি নিউজ।

০৪ আগস্ট ২০২২, ০৪:৫৩পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।