• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পুষ্টিগুণে মাছ মাংসের উত্তম বিকল্প ‘সয়াবিন’

পুষ্টিগুণে মাছ মাংসের উত্তম বিকল্প ‘সয়াবিন’

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

যারা প্রাণিজ আমিষ এড়িয়ে যেতে চান তাদের জন্য সুখবর বটে। আমিষের বিকল্প উৎস হিসেবে সয়াবিন দারণভাবে সফল। প্রাণিজ আমিষের বিকল্প হিসেবে সয়াবিন এখন বাজারের সেরা। আমিষে ভরপুর সয়াবিন ভিটামিন ও মিনারেলের উৎকৃষ্ট উপাদান।

ডায়াবেটিসসহ জটিল রোগে আক্রান্তদের জন্য সয়াবিন অত্যন্ত উপকারি। চিকিৎসকরা এখন অনেক রোগীকে সয়াবিন খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।

তাই আমাদের এই পর্বে পাঠকদের জন্য সয়াবিনের পুষ্টিগুণ নিয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

পরিচয়

সয়াবিন এক প্রজাতির শুঁটি জাতীয় উদ্ভিদ। এটির আদি নিবাস পূর্ব এশিয়ায়। এতে অতিরিক্ত চর্বি নেই, ফলে তা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি। প্রাণিজ আমিষের বিকল্প হিসেবে এতে রয়েছে প্রচুর আমিষ। সয়াাবিনের গাছকে ‘গ্রেটার বিন’ (greater bean) বলা হয়।

সয়া শব্দটি এসেছে চীনা বা জাপানি 'সয়া সস্' থেকে। সয়াবিন বীজ হতে তেল নিষ্কাশনের পর বৈশিষ্ট্যযুক্ত উদ্ভিজ্জ প্রোটিন পাওয়া যায়।

সয়াবিনের গুণাগুণ

শুকনো সয়াবিনে রয়েছে ২০% তৈল, ৪০% প্রোটিন, ৩৫% কার্বোহাইড্রেট। সয়াবিনের প্রোটিন মানের দিক থেকে প্রাণিজ প্রোটিনের সাথে তুলনাযোগ্য, যা সয়াবিনকে অন্যান্য উদ্ভিদ থেকে আলাদা করে। প্রাণিজ প্রোটিনের পরিবর্তে বিকল্প প্রোটিন হিসাবে নিয়মিত সয়াবিন গ্রহণ করায় প্লাজমা কোলেস্টেরলের পরিমাণ ২৩-২৫% কমে।

প্রতি ১০০ গ্রাম সয়াবিনে রয়েছে
প্রোটিন ৪৩ গ্রাম
শর্করা ৩০ গ্রাম এবং
ফ্যাট ২০ গ্রাম।

সয়াবিনের উপকারিতা

সাধারণত সয়াবিন তিন রকমের হয়। এই সয়াবিন নানাভাবে খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। তবে সবুজ রঙের সয়াবিন সেদ্ধ করে খাওয়া হয়। এছাড়া সালাদ, তরকারি ও স্যুপ করেও খাওয়া হয়। হলুদ রঙের সয়াবিন থেকে দুধ, টফু ও বেকিংয়ের জন্য ময়দা তৈরিতে ব্যবহার হয়ে থাকে।

আমিষের চাহিদা পূরণ করে : যারা প্রাণিজ আমিষ এড়িয়ে চলেন, তাদের জন্য সয়াবিন আমিষের আদর্শ উৎস। মাংস, ডিম, ডাল ও মাছের মতোই সয়াবিনে রয়েছে প্রচুর আমিষ।

হাঁড় গঠন : সয়াবিনে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন, যা হাঁড় গঠনে খুবই কার্যকরি। প্রাণিজ আমিষের সব উপাদান সয়াবিনে রয়েছে। হাঁড়ের সমস্যায় যারা ভুগছেন, তাদের খাবার তালিকায় সয়াবিন রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

হৃদরোগে ঝুঁকি কমায় : আমিষের সহজ উৎস হলেও মাংস হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু সয়াবিন আমিষের চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। কারণ এতে কোলেস্টেরলের মাত্রা খুবই কম।

ওজন কমায় : সয়াবিনে রয়েছে জিরো কোলেস্টেরল। ফলে আপনি সয়াবিন খেলেও আপনার ওজন বাড়বে না। কাজেই যারা খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য সয়াবিন একটি আদর্শ খাবার।

হজমশক্তি বাড়ায় : সয়াবিনে রয়েছে প্রাকৃতিক আঁশ। এটি হজমশক্তি ও পরিপাকক্রিয়া উন্নত করে।

শক্তিবর্ধক : সয়াবিনে রয়েছে প্রচুর পটাশিয়াম। এই খনিজ উপাদানটি শরীর ঝরঝরে করে। এছাড়া দৈহিক শক্তি বৃদ্ধিতে সয়াবিন খুবই কার্যকরি।

রক্তের চাপ কমায় : সয়াবিন আমিষে ভরপুর হলেও এটি খাওয়ার ফরে রক্তের চাপ বাড়ে না। বরং সয়াবিন রক্তের চাপ কমায়।

স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় : শিশু ও কৈশোর বয়সে সয়াবিন খাওয়ার অভ্যাস করলে, প্রাপ্তবয়সে ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সয়াবিনে থাকা ইসোফ্লাভন ও ফিটনউট্রিয়েন্ট ক্যান্সারে টিউমার কমাতে সাহায্য করে।

প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় : পৃথিবীতে দ্বিতীয় ক্যান্সার ঝুঁকির নাম প্রোস্টেট ক্যান্সার। এই ঝুঁকি কমাতে খেতে পারেন সয়াবিন। বিজ্ঞানীরা বলেন, সয়াবিনের উপকারি উপাদান টিউমারের বৃদ্ধিতে বাধা দেয়।

তথ্যসূত্র : হেলথলাইন ডট কম, হেলথবেনিফিট ডট কম, আনন্দবাজার ও উইকিপিডিয়া

 

এবি/এসএন

২০ আগস্ট ২০২১, ০৫:৩৩পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।