• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাদে ও পুষ্টিতে অনন্য কবুতরের মাংস

স্বাদে ও পুষ্টিতে অনন্য কবুতরের মাংস

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

একদা চিঠি আদান-প্রদানের কাজে কবুতর ব্যবহার করা হতো। এখন যুগ পাল্টেছে, চিঠি এখন ভার্চুয়াল। তাই কবুতরের কদর হয়তো কমে গেছে। তবে শান্তির প্রতীক এই কবুতর শুধু চিঠি আদান-প্রদানের কাজেই ব্যবহৃত হতো না, এর মাংস খাওয়ার প্রচলন যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। কবুতর এখন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পালন করা হয়। এর মাংস অত্যন্ত পুষ্টিকর। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী ও শিশুদের জন্য কবুতরের মাংস খুবই উপকারি।

প্রিয় পাঠক, এতক্ষণে নিশ্চয় বুঝে গেছেন আমাদের এবারের পর্বে কবুতরের মাংসের পুষ্টিগুণ নিয়ে আলোচনা করা হবে। চলুন আর দেরি নয়-

পরিচয়

কবুতর বিশ্বে ‘শান্তির প্রতীক’ হিসেবে পরিচিত। আমাদের দেশে এর আরেক নাম ‘পায়রা’। মূলত ইউরোপ, দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া ও উত্তর আফ্রিকার বিস্তৃত অঞ্চলে কবুতর পাওয়া যায়। এসব অঞ্চলে কবুতর বেশি বাস করে। পৃথিবীতে কয়েক প্রজাতির কবুতর পাওয়া যায়। এর মধ্যে রয়েছে ফ্লোরেনটাইন, কোবার্গ স্কাইলার্ক, মন্ডেইন, পোলিশ লিংস, কিং, রোমান স্ট্রেমার প্রমুখ। স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিতে কবুতর বেশ জনপ্রিয়।

কবুতরের মাংসের বৈশিষ্ট

সুস্বাদু কবুতরের মাংস অন্য পাখি প্রজাতির প্রাণীর মাংসের মতো নয়। এটা বেশ নরম ও কোমল প্রকৃতির। কবুতরের মাংসে মোটা আঁশ কম। যে কারণে এটি গর্ভবতী নারী ও শিশুদের জন্য বিশেষ একটি খাবার। তবে কবুতরের মাংস পরিমিত আকারে খাওয়া উচিত।

পুষ্টি উপাদান

কবুতরের মাংসে রয়েছে খাদ্যশক্তি, চর্বি, প্রোটিন ও বিভিন্ন রকমের ভিটামিন। এতে আরও রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, সোডিয়াম, জিংক, পটাশিয়াম ও ম্যাঙানিজের মতো খনিজ উপাদান।

প্রতি ১০০ গ্রাম কবুতরের মাংসে রয়েছে-

জলীয় অংশ ৭২.৮২ গ্রাম
শর্করা ০ গ্রাম
আঁশ ০ গ্রাম
ফ্যাট ৪.৫২ মিলিগ্রাম
প্রোটিন ২১.৭৬ গ্রাম এবং
কোলেস্টেরল ৯০ মিলিগ্রাম।

উপকারিতা

গর্ভবতীর বিশেষ উপকার : গর্ভবতী নারীদের বিশেষ শারীরিক শক্তি বুস্ট করার জন্য কবুতরের মাংস অত্যন্ত কার্যকরি একটি উৎস। এটি প্রসূতি মায়েদের বুকের দুধ বৃদ্ধিতেও কার্যকরি। এছাড়া কবুতরের মাংস দ্রুত হজম হওয়ায় তা গর্ভবতী নারীর দেহে অন্যান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি হয় না।

শিশুদের জন্য কবুতরের মাংস : কবুতরের মাংস খুব নরম ও কোমল। যে কারণে এটি খাওয়ার পর দ্রুত হজম হয়। আর ঠিক এই কারণেই কবুতরের মাংস শিশুদের জন্য হতে পারে প্রোটিনের আদর্শ উৎস।

হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় : এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রন, যা হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় খুবই কার্যকরি।

পুরুষত্ব ঠিক রাখে : পুরুষের যৌন ক্ষমতা নির্ভর করে টেস্টোস্টেরন হরমনের ওপর। আপনি যদি নিয়মিত পরিমিত কবুতরের মাংস খান, তাহলে তা আপনার টেস্টোস্টেরন বুস্ট করতে পারে।

মস্তিষ্কের মতা বাড়ায় : কবুতরের মাংসে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ম্যাঙ্গানিজ। এসব খনিজ উপাদান মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

গ্যাস্ট্রো ইন টেস্টাইনাল ট্রাক সক্রিয় করে : ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস ও সোডিয়ামের এক দারুণ উৎস কবুতরের মাংস। কবুতরের মাংসে থাকা উপকারি এসব খনিজ উপাদান মানব দেহের গ্যাস্ট্রোইন টেস্টাইনাল ট্র্যাক সক্রিয় করে।

শারীরিক শক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : এতে রয়েছে প্রচুর খাদ্যশক্তি, প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম। এসব উপাদান আমাদের শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

সূত্র- পিজিওন অ্যাসোসিয়েশন অব ইউএসএ ডট কম, বিএন ডট হেলদি ফুড ডট কম, মায়া ডট কম ও উইকিপিডিয়া।

 

এবি/এসএন

১৪ আগস্ট ২০২১, ০৮:৩৯পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।