• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

‘ওষুধিগুণে ভরা খেজুরে এত জাদু’

‘ওষুধিগুণে ভরা খেজুরে এত জাদু’

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

খেজুরের নাম মনে পড়লেই রমজান মাসের কথা মনে পড়ে। বাংলাদেশে রমজান মাসেই খেজুর বেশি পাওয়া যায়। আমাদের দেশে ভালো জাতের খেজুর উৎপাদন হয় না। মধ্যপ্রাচ্য, মিসর, তিউনিসিয়াসহ বিভিন্ন আরব দেশ থেকে খেজুর আমাদের দেশে আমদানি করা হয়। তবে সারা বছর বাজারে খেজুর পাওয়া যায়।

পুষ্টিমান বিবেচনায় খেজুর অত্যন্ত শক্তিশালী একটি ফল। এর ওষুধি গুণাগুণও অন্য সব ফলের থেকে আলাদা। খেজুর আমাদের শরীরের জন্য কেন প্রয়োজনীয়, তা ‘আমরাই বাংলাদেশ’র পাঠকদের জানাতে আমাদের এবারের আয়োজন। চলুন দেখে নিই কী আছে খেজুরে-

পরিচয়

খেজুর সংস্কৃত ভাষার একটি শব্দ। এর ইংরেজি নাম Date Palm। খেজুরের বৈজ্ঞানিক নাম ফিনিক্স ড্যাকটিলিফেরা (Phoenix dactylifera)। এই গাছটি প্রধানত মরু এলাকায় ভালো জন্মে।

পুষ্টিগুণ

প্রতি ১০০ গ্রাম খেজুরে রয়েছে
ক্যালরি ২৭৭ কিলোক্যালরি
শর্করা ৭৫ গ্রাম
আঁশ ৭ গ্রাম এবং
প্রোটিন ২ গ্রাম।
এছাড়া এতে রয়েছে পটাশিয়াম ২০ শতাংশ, ম্যাগনেসিয়াম ১৪ শতাংশ, কপার ১৮ শতাংশ এবং ম্যাঙ্গানিজ ১৫ শতাংশ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে।

উপকারিতা

পেশী গঠন করে : খেজুরে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন ও ম্যাগনেসিয়াম। যা আমাদের শরীরের পেশী গঠনে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।

ত্বক উজ্জ্বল করে : এতে রয়েছে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি, ভিটামিন বি ও ভিটামিন কে। যা আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে : খেজুরে থাকা ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। নিয়মিত খেজুর খেলে দৃষ্টিশক্তির সমস্যা দূর হয়।

রক্তশূন্যতা দূর করে : মানব দেহের জন্য আয়রন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি খনিজ উপাদান, যা খেজুরে রয়েছে। নিয়মিত খেজুর খেলে রক্তশূন্যতা থেকে মুক্ত থাকা যায়। বিশেষ করে নারীদের জন্য খেজুর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় : খেজুরে রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি ও কপার। যা হৃদযন্ত্রের সুরক্ষায় খুবই কার্যকরি। তাই নিয়মিত খেজুর খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।

শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করে : খেজুরে রয়েছে শর্করা, প্রোটিন ও পর্যাপ্ত ক্যালরি। যা আমাদের শারীরিক দুর্বলতা দূর করে শক্তি বৃদ্ধিতে দ্রুত কাজ করে। কাজেই দুর্বলতা দূর করতে প্রতিদিন ৩/৪টি খেজুর খেতে পারেন।

ওজন কমাতে সহায়তা করে : শরীরের ওজন বৃদ্ধিতে বেশি দায়ী শর্করা। আমাদের স্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাসে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকায় অনেকেই মুটিয়ে যান। কিন্তু ভাত ও রুটির পরিবর্তে খাদ্য তালিকায় খেজুর রাখলে আপনি পুষ্টি উপাদান পাবেন ঠিকই, পাশাপাশি আপনার ওজন কমতে থাকবে। কারণ এতে শর্করার পরিমাণে খুবই কম। নেই ক্ষতিকর চর্বি।

হাড় ও দাঁতের সুরক্ষা : খেজুরে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ। এই উপাদানগুলো মানব দেহের হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় খুবই কার্যকরি।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় : এতে রয়েছে প্রচুর আঁশ। আর আঁশযুক্ত খাবার পেটের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। ফলে কোলন ক্যান্সার ও পেটের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।

খেজুরের ওষুধিগুণ

সংক্রামক রোগের প্রতিষেধক হিসেবে খেজুর বেশ কার্যকরি। এছাড়া যকৃতের সংক্রমণ রোধে খেজুরের জুড়ি মেলা ভার। সর্দি, কাশি, জ্বর সারাতেও খেজুর খেতে পারেন।

পরামর্শ

খেজুর খুবই উপকারি একটি ফল। তবে যারা কিডনী জটিলতা ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তারা খেজুর খাওয়ার ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ খেজুরে থাকা প্রাকৃতিক সুগার ডায়াবেটিস বাড়িয়ে দিতে পারে। এছাড়া খেজুরে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও কপার, যা কিডনী রোগীদের জন্য হতে পারে বিপদের কারণ।

তথ্যসূত্র: বিবিসি গুড ফুড ডট কম, মেডিকেলনিউজ টুডে ডট কম ও উইকিপিডিয়া।

 

এবি/এসএন

১৩ আগস্ট ২০২১, ০৭:৫০পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।