অভিনব আবিষ্কার
খাবার ছিটিয়ে দূষিত নোংরা লেক এখন টলমলে জলাধার
মানুষ পারেনা এমন কাজ কমই আছে। হিমালয় জয় কিংবা আটলান্টিকের তলদেশ থেকে মুক্তা আহরণ, মানুষ কোথায় নেই? অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর সৃজনশীলতা যে মানুষের মাঝে খেলা করে, তার দ্বারা কাছে সহজ। তেমনই একজন মানুষ মিস্টার ম্যারিনো। ব্যতিক্রমী চিন্তাধারার এই মানুষটি নিজের জন্য কিছু করেননি। বরং নিজের এলাকার একটি পরিত্যক্ত জলাধারের রূপই বদলে দিয়েছেন। ময়লার ভাগাড়ে পরিণত একটি জলাধার বা লেক এখন টলমলে দৃষ্টিনন্দন লেক।
কে এই ম্যারিনো
মিস্টার ম্যারিনোর জাপানের একজন নাগরিক। তিনি জাপানের একজন বিজ্ঞানীও বটে। পানি বিশুদ্ধকরণ বিষয়ের ওপর তিনি জাপানের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রিও অর্জন করেছেন।
ম্যারিনো কেন আলোচনায়
মিস্টার ম্যারিনো জাপানের যে এলাকায় বসবাস করতেন, সেই এলাকায় একটি লেক ছিল। শৈশবে যে লেকের পানিতে ম্যারিনো গোসল করতেন, জলকেলি করতেন। ম্যারিনোর প্রতিবেশীরাও ওই লেকটির পানির ওপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু একটা সময় ম্যারিনো দেখলেন, তার শৈশবের স্মৃতিঘেরা সেই লেক এখন আর আগের মতো নেই। দূষণ ও ময়লা আবর্জনায় ভরে গেছে লেকটি। জলাধারটির পানি হয়ে উঠেছে দূষিত। পানির রং হয়ে গেছে বিবর্ণ। এই অবস্থা দেখে তিনি পুরো লেকের পানি পরিশোধনের সিদ্ধান্ত নেন। যদিও কাজটি অতটা সহজ ছিল না।
ম্যারিনোর দুঃস্বাধ্য সাধন যেভাবে
ম্যারিনো পানি শোধন করার জন্য গতানুগতিক পদ্ধতির বাইরে চিন্তা করলেন। তিনি এমন একটি খাবার আবিষ্কার করলেন, যেটি পানিতে মেশানোর পর পানিতে থাকা ময়লা ও দূষিত পদার্থ নিমিষেই উপরে উঠে আসে। এবং সেই ময়লা জমে যায়। আর এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয় মাত্র ১৫ মিনিটেই। প্রথমে তিনি এক গ্লাস পানি নিয়ে পরীক্ষা চালান। ফলাফল ইতিবাচক হওয়ায় তিনি প্রক্রিয়াটি পুরো লেকের ওপর প্রয়োগ করেন।
ম্যারিনোর বিস্ময়কর ‘পানি পরিশোধক খাবার’
বায়ো ফিল্টার, ন্যানো টেকনোলজি ও বায়োলজির চমকপ্রদ এক সংস্করণ তৈরি করেন ম্যারিনো। নিজের উদ্ভাবিত অর্গানিক খাবার জাতীয় পদার্থ লেকের পানিতে ফেলতে থাকেন তিনি। টানা কয়েকমাস এই কাজ করার পর তিনি লেকের পানিতে দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখতে পান। দুর্গন্ধযুক্ত, নোংরা ও দূষিত জলাধার ক্রমেই পরিণত হয় একটি স্বচ্ছ জলাধারে। যে জলাধার বা লেকের পানি এখন টলমলে নীল রঙে কুলকুল দোল খায়।
ম্যারিনো মনে করেন, পৃথিবীতে অসম্ভব কিছু নেই। পরিবর্তনের ইচ্ছা থাকাই আসল কথা। কাজ করতে হবে, এটা না ভেবে কাজ শুরু করাটাই জরুরি।