• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • রোববার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩১ ভাদ্র ১৪৩১

শক্তিশালী ইন্টারনেট দিয়ে বিশ্বজয় যে দেশের

শক্তিশালী ইন্টারনেট দিয়ে বিশ্বজয় যে দেশের

ফিচার ডেস্ক

৩০ বছর আগের কথা। ১৯৮৩ সাল। সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে একটি দেশ। পৃথিবীতে তখন আমেরিকার নেতৃত্বাধীন পশ্চিমাদের দাপট। ওই একই বছর বিশ্বে প্রথম চালু হয় ইন্টারনেট ব্যবস্থা। সদ্য স্বাধীন ছোট্ট দেশটির তখন পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়। বলছি এস্তোনিয়ার কথা।

কিন্তু অবাক করা ব্যাপার, দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্টারনেটকেই দেশগঠনের হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিকে আর পেছনে ফিরে যেতে হয়নি। উত্তরপূর্ব ইউরোপের দেশ এস্তোনিয়ার উন্নয়ন ও ঘুরে দাঁড়ানোর শুরুটা এরকমই।

এস্তোনিয়ার ইন্টারনেট

দেশটির ইন্টারনেট ব্যবস্থা অত্যন্ত শক্তিশালী। ১৯৮৩ সাল থেকে এস্তোনিয়ার সরকার দেশটির সকল ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যবস্থা যোগ করে। তাদের লক্ষ্য ছিল, ডিজিটালাইজড এস্তোনিয়া গড়ে তোলা।

এস্তোনিয়ার ইন্টারনেট নিয়ে যে কারণে এত আলাপ

⊃ দেশটির সরকারি, বেসরকারি সহ সকল প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকাণ্ড ইন্টারনেট নির্ভর।

⊃ জন্মনিবন্ধন, বিবাহ, তালাক, চিকিৎসা, শিক্ষা সহ যাবতীয় বিষয় সহজেই ইন্টারনেট ভুক্ত করা যায়।

⊃ জন্মের পরপর যেকোনো ব্যক্তি নিজের মোবাইল ফোন দিয়েই সন্তানের জন্মনিবন্ধন করাতে পারেন।

⊃ ঘরে বসেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সেবা নিতে পারেন ইন্টারনেট কলের মাধ্যমে।

⊃ খাবার সংগ্রহ, চাকরি অনুসন্ধানের মতো কাজও করা যায় ইন্টারনেট থেকে।

⊃ এস্তোনিয়া জুড়ে রয়েছে সরকারি উন্মুক্ত ওয়াইফাই ইন্টারনেটের ব্যবস্থা, যা অত্যন্ত নিরাপদ।

⊃ দেশটির সকল ইন্টারনেট ব্যবস্থা অত্যন্ত শক্তিশালী, যা কখনোই হ্যাক হওয়া সম্ভব নয়।

⊃ হ্যাক রোধ করতে দেশটির সরকার সার্বক্ষণিক বিশ্বমানের প্রযুক্তিবিদদের নিযুক্ত করেছে।

⊃ এমনকি, ইন্টারনেট থেকে শর্ত পূরণ সাপেক্ষে অন্যরা এস্তোনিয়ার ভার্চুয়াল নাগরিকও হতে পারেন।

যেভাবে আজকের ইন্টারনেট বিপ্লব এস্তোনিয়ায়

১৯৮৩ সালে তৎকালীন এস্তোনিয়ান সরকার একটি সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। যে সিদ্ধান্তের মধ্যদিয়ে, দেশটির সকল শিশুকে প্রাথমিক পর্যায় থেকেই কোডিং ও রোবোটিক্স এর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। দেশটির শিশুরা স্কুলে প্রথম গিয়েই কম্পিউটার ও ইন্টারনেট বিষয়ক শিক্ষা লাভ করে। শিশুদের হাতে কলমে এগুলো শেখানো হয়।

আর এভাবেই এস্তোনিয়া বছরের পর বছর ধরে হাজার হাজার প্রোগ্রামার, অনলাইন এক্সপার্ট, প্রযুক্তিবিদ, রোবট নির্মাতা সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছে। বর্তমানে বিশ্বের বহু দেশে তথ্যপ্রযুক্তি ও ইন্টারনেট নির্ভর খাতে এস্তোনিয়ার এক্সপার্টরা কাজ করছেন।

নিরাপদ ও শক্তিশালী ইন্টারনেট ব্যবস্থার মাধ্যমে একটি দেশ কীভাবে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে, তার বাস্তব উদাহরণ এই এস্তোনিয়া।

০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৫০পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।